পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১২

স্বাধীনতার ঘোষক ও একটি র্নিদলীয় ইতিহাস

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাদের বিতর্কের প্রথম বিষয় হয়ে দাঁড়ায় স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে। বিএনপির দাবি জিয়াউর রহমান তো আওয়ামী লীগ নয়। গত নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে মরহূম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ হিসেবে মেনে না নেয়ায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করে। এখানে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে- রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে প্রয়াত মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান নিজেই যে বিতর্কটির সুষ্ঠু সমাধান দিয়ে গেছেন সে বিষয় নিয়ে স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও কেন এ অহেতুক বিতর্ক!
        পূর্বেও ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ১৯৯১ সালে প্রথমবার সরকার গঠনের পর থেকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ নিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে। ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বার (স্বল্ফমেয়াদী ও বিতর্কিত) এবং ২০০১ সালে তৃতীয়বার সেই বিতর্ক প্রাতিষ্টানিক রূপ লাভ করে। অতচ বিএনপি ঐ তিনটি সংসদে এ বিষয়ের সুষঠু সমাধান তথা কোন বিল পাস না কওে বিতর্কটি জিইয়ে রেখেছে। অপরদিকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি অনুযায়ী শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণাটি ছিল নিম্নরূপ:

“This may be my last message, from today Bangladesh is independent. I call upon the people of Bangladesh wherever you might be and with whatever, you have to resist the army of occupation to the last. Your fight must go on until the last soldier of the Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved”.
 অপরদিকে, ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমানের ঘোষণাটি ছিল নিম্নরূপ:
ÒMajor Zia, provisional Commander in Chief of the Bangladesh Liberation Army, hereby proclaim on behalf of Sheikh Mujibur Rahman, the independence of Bangladesh”.
রনজিত চন্দ্র সূত্রধর
এ ঘোষণাপত্রটি থেকেও বিষয়টি বোঝা যায়। আরও দু’টি উদাহরণের মাধ্যমে আমি বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্ঠা করছি।
        প্রথম. স্কুলে ক্লাস শুরু হলে দপ্তরি ঘণ্টা বাজায় আবার ক্লাস শেষ হলে ঘণ্টা বাজায়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে দপ্তরি কি তার নিজের ইচ্ছায় ঘণ্টা বাজিয়ে ক্লাস শুরু বা শেষ করতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই না। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ সাপেক্ষে সে (দপ্তরি) ঘণ্টা বাজিয়ে ক্লাস শুরু বা শেষ করেন।
        দ্বিতীয়. রেডিও, টেলিভিশনের উপস্থাপকেরা কি নিজের খেয়াল খুশি মত অনুষ্ঠান সূচি ঘোষণা বা প্রচার করতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই না। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ সাপেক্ষে সে অনুষ্ঠান প্রচার অথবা অথবা অনুষ্টান সূচী পাঠ করেন।
স্বাধীনতার যুদ্ধে মেজর জিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। এ ছাড়া মেজর জিয়া কখনো তার বক্তব্যে নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবি করেননি। অথচ স্বাধীনতার এত এ দুই মহান নেতাকে নিয়ে দেশব্যাপী অহেতুক বিতর্ক চলছে। দুই দলের নেতা কর্মীদের প্রতি আমার আহবান বিতর্কে না জড়িয়ে মহান দুই নেতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের সেবার মান নিশ্চিত করুন।[সূত্র: স্বাধীনতার দলিলপত্র ও নিউক্লিয়াস]


1 টি মন্তব্য: